আতিকুল আলম স্টাফ রিপোর্টার ।। আশুলিয়া থানা পুলিশের অভিযানে নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্ত্রীর সামনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের সময় আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান। এসময় তিনি বলেন গত ৯-৩-২৫ তারিখে রাত আনুমানিক ৯টার সময় আশুলিয়া থানার নয়ারহাট বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ-কে স্ত্রীর সামনে হত্যা করে স্বর্ণ ডাকাতি করে নিয়ে যায়। উক্ত ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটনসহ লুণ্ঠিত ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার,স্বর্ন বিক্রির ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাপাতিসহ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো:(১) মোঃ রিপন মিয়া (৪০),পিতা মোঃ হক ভূঁইয়ার,গ্রাম পিটুয়া বন্দের বাড়ি,থানা করিমগঞ্জ,জেলা কিশোরগঞ্জ। (২) আরিফ প্রামাণিক (৩০),পিতা জোনাই প্রামাণিক,গ্রাম চর ভবানীপুর,থানা সুজানগর,জেলা পাবনা। (৩) মোঃ শাহ আলম (৪৫),পিতা মৃত করিম শেখ,গ্রাম সরাডাঙ্গী (সরদারপাড়া) থানা আতাইকুলা,জেলা পাবনা। (৪) মোঃ আরমান শেখ (৩৭),। পিতা মৃত করিম শেখ,গ্রাম সরাডাঙ্গী (সরদারপাড়া) থানা আতাইকুলা,জেলা পাবনা। (৫) মোঃ ইব্রাহিম বাবু (৪৫) পিতা মৃত মোসলেম উদ্দিন,গ্রাম কর্নহার,থানা জেলা রাজশাহী। (৬) মোঃ মাসুদ রানা কালা মাসুদ (৪৫),গ্রামের মৃত করিম শেখের ছেলে মোঃ শাহ আলম (৪৫), মোঃ আরমান শেখ (৩৭), পিতা মৃত শফিকুর রহমান,গ্রাম বৃষ্টিপুর,থানা দেবিদ্বার,জেলা কুমিল্লা।
পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান বলেন,গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। এদের মধ্যে কেউ দিনের বেলায় অটোরিকশা চালায়,কেউ ফলের ব্যবসা করে এলাকায় রেকি করে রাতের বেলায় ডাকাতি করে। এদের মধ্যে ৫ ডাকাত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে হত্যা ও স্বর্ণ ডাকাতি সংঘটিত করে এবং একজন ডাকাতির মালামাল তার জিম্মায় রাখে। তিনি আরও বলেন,স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির সময় ডাকাত ইমরান,তার দুই ভাই শাহ আলম ও আরমান, রিপন, আরিফ,আকাশ,তালিম ও মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ একটা ভাড়া গাড়িতে করে নয়ারহাট এলাকায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির টার্গেট করে। ইমরান ও আকাশ উক্ত ভাড়া গাড়ির ভিতরে অবস্থান করে, আরমান ও শাহ আলম ঘটনাস্থলের পাশে পাহারা দেয় এবং তালিম ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতংক তৈরী করে। রিপন ও আরিফ দুটো চাপাতি দিয়ে দিলীপকে কোপ দেয় এবং মাসুদ রানা (কালা) মাসুদ স্বর্ণের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে ভাড়াকৃত গাড়িতে ওঠে ৮ জন মিলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়।
এছাড়াও গ্রেফতার কৃত ডাকাতদের মধ্যে রিপনকে সাভারের যাদুরচর এলাকা থেকে,মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ,শাহ আলম এবং আরমান-কে আশুলিয়ার বারইপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা ৩ জন আপন ভাই। পরে রিপন,শাহ আলম,আরমান ও মাসুদ রানা কালা মাসুদের দেওয়া তথ্য মতে আরিফকে রাজবাড়ির গোয়ালন্দ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮ ভরি স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রয়ের ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতির স্বর্ণ ক্রয়ের সাথে জড়িত ইব্রাহিমকে রাজশাহীর কর্ণহাট এলাকা থেকে লুট করা ৫ ভরি স্বর্ণসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আরিফের দেখানো আরমানের ফলের দোকান থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। তারা সবাই আন্তঃজেলা ডাকাত। দিনের বেলায় এরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে একত্র হয়ে বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করে থাকে। তাদের চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য ঢাকা জেলা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এবিডি.কম/শিরিন আলম